 |
সেরা ৫ ফটো এডিটিং এপ |
প্রীত রেজা কে?
ফটোগ্রাফি নিয়ে আকর্ষণ আছে এমন কোন বাংলাদেশি পাওয়া যাবেনা যে ফটোগ্রাফার প্রীত রেজার নাম শোনেনি। বিয়ের ছবি তোলাকে সম্মানজনক পেশায় পরিণত করেছেন এই ফটোগ্রাফার। তার পুরো নাম মোহাম্মদ জাহিদ রেজা। দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন এই ফটোগ্রাফার। তিনি বিভিন্ন বড় বড় পত্রিকার জন্য আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ফুজিফিল্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন।
২০২০সালের একুশে বইমেলাতে প্রীত রেজার "স্মার্টফোন ফটোগ্রাফি" নামক বই প্রকাশ পেয়েছে। বইটিতে তিনি ফটোগ্রাফি সম্পর্কে বেসিক কিছু ধারণা দিয়েছেন। বইটিতে তিনি ফটো এডিট করার জন্য সেরা কিছু এপের নাম উল্লেখ করেছেন। এই ব্লগটিতে আমি সেই এপগুলো থেকে সেরা ৫টি এপের নাম তুলে ধরছি। সাথে সেই এপগুলোর ফিচার সম্পর্কে সাধারণ ধারণাও লিখছি।
১. স্ন্যাপসিড (Snapseed)
 |
গুগলের স্ন্যাপসিড |
প্রীত রেজা তার সেরা ফটো এডিটিং এপ গুলোর তালিকায় "স্ন্যাপসিড" নামক এপকে প্রথমে রেখেছেন। এই এপটি ফটো এডিটিং এর জন্য এতোটাই ভালো যে সকল ফটো এডিটিং এপ এর তালিকায় এটি থাকবেই। এপটি তৈরি করেছে 'গুগল' আর তা থেকেই বুঝা যায় এপটি কতো প্রফেশনাল মানের। আসলেই তাই, প্রফেশনাল মানের এডিটিং এই এপ ব্যবহার করে হাতের মুঠোতেই সেরে ফেলা যায়।
স্ন্যাপসিডের কাজঃ
১/ প্রথমেই প্লে-স্টোর থেকে স্ন্যাপসিড (Snapseed) এপ ডাউনলোড করে নাও --
Snapseed
২/ প্রথমবার এপটি অপেন করলেই একটি প্লাস (যোগ) চিহ্ন দেখতে পাবে। সেটিতে ক্লিক করলে স্টোরেজ পার্মিশন চাইবে (প্রথমবারের জন্য)। সেটিকে "Allow" (এলাউ/অনুমতি) করে দাও।
 |
২.১ স্ন্যাপসিড এপ |
 |
২.২ স্টোরেজ পার্মিশন প্রদান |
৩/ গ্যালারী বা ফাইল ম্যানেজার থেকে যে ছবি এডিট করতে চাও সেটা সিলেক্ট বা নির্বাচন করো।
ছবি নির্বাচন করার পর তিনটি ট্যাব বা অংশ দেখতে পাবে -- Styles (স্টাইলস), Tools(টুলস) ও Export(এক্সপোর্ট).
 |
৩.১ স্ন্যাপসিড স্টাইলস |
 |
৩.২ স্ন্যাপসিড টুলস |
 |
৩.৩ স্ন্যাপসিড এক্সপোর্ট |
Styles: স্টাইলস ট্যাবে ফটোতে বিভিন্ন এফেক্ট যুক্ত করার অপশন আছে। নানাধরণের ওভারলে বা এফেক্ট এখান থেকে যুক্ত করা যায়। এটির সাহায্যে ফটোতে ভিন্ন রূপ দেয়া যায় খুুুব সহজে।
Tools: এই ট্যাবটি প্রোফেশনাল ফটো এডিটিং করার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। ট্যাবটিতে রয়েছে বিভিন্ন কার্যকরী টুল বা যন্ত্র যা ফটো এডিট করার সময় খুবই কাজে লাগে।
Export: ফটো এডিট করা শেষে ফটোকে সেইভ করে রাখতে হয়। আর এজন্যই এক্সপোর্ট ট্যাবটি ব্যবহার করা হয় এডিট করা ফটোকে এক্সপোর্ট করার জন্য।
২. ফটোশপ এক্সপ্রেস (Photoshop Express)
 |
এডোভির ফটোশপ এক্সপ্রেস |
ফটো এডিট করার কথা বললেই মাথায় আসে ফটোশপের কথা। আর ফোন দিয়ে প্রফেশনালদের মতো ফটো এডিট করার জন্য 'এডোভি' তৈরি করেছে ফটোশপ এক্সপ্রেস। এপটি দিয়ে মূলত বিভিন্ন ধরনের এফেক্ট ফটোতে যুক্ত করা যায়।
ফটোশপ এক্সপ্রেস এর কাজঃ
২/ ফটোশপ এক্সপ্রেস ব্যবহার করতে হয় অনলাইনে। আর এটির জন্য এপটিতে সাইন ইন করতে হয়। এপটিতে সাইন ইন করা যায় ফেসবুক, গুগল ও এডোবি আইডি দিয়ে।
 |
২. ফটোশপ এক্সপ্রেস সাইন ইন |
৩/ প্রথমবার সাইন ইন করার পর এপটি স্টোরেশ পার্মিশন চাইবে। যেহেতু পার্মিশন না দিলে এপটি ছবি নিতে পারবেনা তাই পার্মিশন দিয়ে দিতে হবে।
৩. পিক্সএলআর (Pixlr)
 |
পিক্সেলআর |
প্রীত রেজার তালিকা থেকে তৃতীয় স্থানে রাখা যায় পিক্সেলআর এপটিকে। এই এপটি খুবই সাধারণ একটি এপ। এতে প্রথম দুটি এপের মতো ফটো এডিট করার অনেক টুলস নেই। তবে যে কয়েকটি টুলস রয়েছে সেগুলো অন্য এপের মাঝে নেই। সাধারন টুল গুলোর মাঝে আছে ফটোতে বিভিন্ন এফেক্ট আর বর্ডার যোগ করা। তবে এই এপটির সেরা টুল হলো ফটোর নির্দিষ্ট অংশকে অন্ধকার করা ও আলোকিত করা।
পিক্সেলারের কাজঃ
১/ পিক্সেলার ডাউনলোড করে নাও প্লেস্টোর থেকে --
Pixlr২/ এই এপে প্রবেশ করলেই টেমপ্লেট ও কলাজ নামের দুটি বিশেষ অপশন পাওয়া যাবে।
কলাজ নামক অপশন ব্যবহার করে তুমি তোমার একাধিক ছবিকে একটি ছবির মাঝে যুক্ত করতে পারো।
টেমপ্লেট অপশনটিতে তুমি অনেকগুলো টেমপ্লেট থাকবে। এই টেমপ্লেটগুলো গ্রাফিক্স নির্মিত যেখানে তুমি তোমার ইচ্ছা মতো নিজের ছবি দিতে পারবে।
 |
২.১ পিক্সেলার অপশনস |
 |
২.২ পিক্সেলার টেমপ্লেট |
৪. ভিএসসিও বা ভিস্কো (VSCO)
 |
ভিস্কো এপ |
ভিস্কো এপটি আরেকটি প্রফেশনাল ফটো এডিটিং এপ।এপটিতে প্রফেশনালভাবে নানা টুলস ব্যবহার করে ফটোকে এডিট করা যায়। তবে এপটির মাঝে সেরা ফিচার বা টুল হলো নানা ধরনের প্রিসেট। এপটিতে থাকা এই প্রিসেটগুলো ফোন দিয়ে তোলা ছবিকেও একটি প্রফেশনাল লুক দেয় যাতে মনে হয় ছবিটা কোন প্রফেশনাল ক্যামেরা দিয়ে তোলা।
এপটিতে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক মেম্বারশিপ প্রোগ্রাম রয়েছে, যেটি ব্যবহার করে আরো উন্নত প্রিসেট পাওয়া যেতে পারে। তবে সাবস্ক্রিপশন ছাড়াও ফ্রি প্রিসেটগুলোও খুবই চমৎকার।
ভিস্কোর কাজঃ
১/ প্লেস্টোর থেকে ভিস্কো এপটি ইনস্টল করো --
VSCO: Photo & Video Editor২/ এপটিতে ছবি আপলোড করলে নানা ধরনের প্রিসেট দেখতে পাবে। এই প্রিসেটগুলো অনেকটা ওভারলের মতো হলেও এটি অনেকটা প্রোফেশনাল লুক দেয় ছবির মাঝে। বেশিরভাগ প্রিসেটই প্রো মেম্বারশিপে পাওয়া যায়। তবে কিছু ফ্রি প্রিসেটও চমৎকার।
 |
২. ভিস্কো প্রিসেট |
৩/ এপটিতে প্রিসেটের পাশাপাশি অনেকগুলো এডিটিং টুলসও রয়েছে। এটিকে অন্যান্য ফটো এডিটরের মতোই ব্যবহার করা যায়।
 |
৩. ভিস্কো এডিটিং টুলস |
৪/ ভিস্কোকে ভিডিও এডিটিং টুল হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে ভিডিওর কালার গ্রেডিং চমৎকারভাবে করা যায়। তবে এজন্য ভিস্কোর মেম্বারশিপ প্রোগ্রামে সাবস্ক্রাইব করতে হয়।
৫. লেন্স ডিস্টোরশনস (Lens Distortions)
 |
লেন্স ডিস্টোর্শন্স |
লেন্স ডিস্টোরশন কোন প্রফেশনাল ফটো এডিটিং এপ নয়। বরং এই এপটি ব্যবহার করে ফটোতে বিশেষ এক ধরণের এফেক্ট যুক্ত করা যায় যেটিকে বলা হয় 'লেন্স ডিস্টোরশন'। ক্যামেরার লেন্সে যখন আলোর প্রতিফলন বা বিচ্ছুরণ ঘটে তখন সেটিকেই লেন্স ডিস্টোরশন বলে।
লেন্স ডিস্টোরশনসের কাজঃ
১/ লেন্স ডিস্টোরশনস এপটি তাদের অফিসিয়াল সাইট থেকে ইনস্টল করে নাও --
Lens Distortion২/ এপটিতে প্রবেশ করার পর কোন ছবিতে লেন্স ডিস্টোরশন বা লেন্স ফ্লেয়ার যুক্ত করার জন্য "Choose a photo to edit" বাটনে চাপ দাও।
 |
২. লেন্স ডিস্টোরশন স্ক্রিন |
৩/ ছবি ইম্পোর্ট বা সিলেক্ট করার পর অনেকবড় একটি তালিকা দেখতে পাবে যেখানে অনেক রকমের অনেকগুলো লেন্স ফ্লেয়ার রয়েছে। তুমি তোমার নিজের পছন্দমতো একটিকে তোমার ছবিতে যুক্ত করতে পারো।
 |
৩. লেন্স ডিস্টোরশন তালিকা |
বিশেষঃ এপটিতে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে একাউন্ট তৈরি করা যায় ও নিজের ছবিগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করা যায়। আবার অন্যের সুন্দর ছবিগুলোও নেট কানেকশন থাকলে দেখা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ